বলিউড অভিনেত্রী মালাইকা অরোরার পিতা, অনিল অরোরা, মুম্বাইয়ের একটি বিল্ডিংয়ের ষষ্ঠ তলা থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনাটি ঘটে বান্দ্রা এলাকায়। পুলিশ এবং ক্রাইম ব্রাঞ্চের দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং বর্তমানে তদন্ত চলছে। পুলিশ এখনও কোনো সুইসাইড নোট উদ্ধার করতে পারেনি, তবে পরিবার এবং কাছের ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলছে।
দীর্ঘদিনের অসুস্থতা ও মানসিক চাপ
পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, মালাইকার বাবা অনিল অরোরা দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থতায় ভুগছিলেন। তার অসুস্থতা এবং শারীরিক অবস্থার অবনতি মানসিক চাপে পরিণত হয়েছিল, যা হয়তো তাকে এমন চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে। যদিও পুলিশ এখনও বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করেনি, তবে অনুমান করা হচ্ছে যে মানসিক চাপের কারণেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
পরিবারের প্রতিক্রিয়া ও আরবাজ খানের উপস্থিতি
মালাইকা অরোরার প্রাক্তন স্বামী, আরবাজ খান, এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি পরিবারকে মানসিক সমর্থন দিতে পাশে দাঁড়িয়েছেন। অনিল অরোরার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং পুলিশ ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছে। পরিবারের লোকজন এবং কাছের আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যাবে তার আত্মহত্যার পিছনে আরও কারণ থাকতে পারে কি না।
পিতা-মাতার বিচ্ছেদ ও মালাইকার শৈশবের স্মৃতি
মালাইকা অরোরা পূর্বেও তার পরিবারের বিষয়ে কথা বলেছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি তার কঠিন শৈশবের স্মৃতি তুলে ধরেন, বিশেষত তার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের সময়ের অভিজ্ঞতা। মাত্র ১১ বছর বয়সে মালাইকা এবং তার বোন অমৃতা তাদের মায়ের সঙ্গে চলে আসেন। তাদের পিতা অনিল অরোরা ছিলেন মার্চেন্ট নেভির কর্মী, তবে পারিবারিক সমস্যার কারণে সেই সময়টায় তাদের পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
মালাইকা তার শৈশবকে “দুর্দান্ত” বলে বর্ণনা করলেও, তিনি জানান যে সেটি অশান্ত ছিল। জীবনের কঠিন সময়গুলো তাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিয়েছে এবং তিনি সেইসব মুহূর্ত থেকে শক্তি সংগ্রহ করেছেন। ২০২২ সালে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, জীবনের কঠিন সময়গুলো আপনাকে মূল্যবান শিক্ষা দেয় এবং তার জীবনের ঘটনাগুলো তাকে দৃঢ় করেছে।
পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ও তদন্তের অগ্রগতি
পুলিশ মৃতদেহ পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠিয়েছে, এবং তদন্ত চলছে। পুলিশ এই ঘটনার পিছনে আরও তথ্য খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে, এবং পোস্টমর্টেম রিপোর্টের মাধ্যমে মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণ করা হবে। এছাড়াও, পুলিশের পক্ষ থেকে অনিল অরোরার বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, যাতে আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
শোক ও মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা
এই মর্মান্তিক ঘটনা মালাইকা অরোরার পরিবারকে গভীর শোকে ভাসিয়েছে। মানসিক চাপ এবং অসুস্থতা প্রায়ই মানুষকে আত্মহত্যার মতো চরম সিদ্ধান্ত নিতে প্ররোচিত করে। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে মানসিক স্বাস্থ্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা নিয়মিত মনোযোগ ও সঠিক সহায়তা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: অরুণা বিশ্বাসের ইউটার্ন: সমালোচনা এবং পরবর্তীতে নতুন অবস্থান