সঠিক বেগুন চাষ পদ্ধতি না জানার কারণে অনেক সময় বেগুন চাষিরা হতাশ হন। সঠিক জাত নির্বাচন, রোগবালাই দমন এবং সঠিক নিয়মে সার প্রয়োগ নিরাপদ বেগুন চাষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের দেশে প্রায় শতাধিক জাতের বেগুন পাওয়া যায়। জনপ্রিয় এই সবজির চাষ সারা বছর করা সম্ভব হলেও, উচ্চ তাপমাত্রায় বেগুনের ফুল ও ফলন উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ বেড়ে যায়।
এজন্য গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে বেগুনের ফলন তেমন ভালো হয় না। তাই শীতকাল বেগুন চাষের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। তবে বর্তমানে কিছু উচ্চ তাপমাত্রা সহিষ্ণু জাত গ্রীষ্মকালেও ভালো ফলন দেয়।
বেগুনের ভালো ফলন পেতে সঠিক নিয়মে চাষ করা প্রয়োজন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক বেগুন চাষের সঠিক পদ্ধতি:
মাটি প্রস্তুতি
বেলে দোআঁশ বা দোআঁশ মাটি বেগুন চাষের জন্য উত্তম। জমি ভালো করে চাষ ও মই দিয়ে আগাছামুক্ত করে মাটি ঝুরঝুরে ও সমান করতে হবে।
চারা তৈরি
বীজতলায় বেগুনের চারা গজানোর পর মূল জমিতে বপন করতে হয়। বীজতলা তৈরির জন্য সহজে পানি নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত, ছায়ামুক্ত স্থান নির্বাচন করতে হবে।
গ্রীষ্মকালীন বীজ জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি, বর্ষাকালীন বীজ এপ্রিল মাসে এবং শীতকালীন বীজ আগস্ট-অক্টোবর মাসে বোনা হয়। বীজতলা তৈরির জন্য মাটি গভীরভাবে (অন্তত ২০ সেমি) চাষ দিতে হবে।
৩ বর্গ মি. বীজতলার জন্য ২৫ গ্রাম বীজ লাগে এবং মাটি উর্বর হতে হবে। উর্বরতা কম হলে জৈব সার ও সামান্য পরিমাণ ফসফেট সার ব্যবহার করা যেতে পারে। বীজতলায় ৫০ মেশ নাইলন নেট দিয়ে ঢেকে চারা উৎপাদন করলে ভাইরাস রোধ করা যায়।
জমি প্রস্তুতি ও চারা বপন
বেগুন চাষের জমি সেচ ও পানি নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত এবং পর্যাপ্ত সূর্যালোক পায় এমন স্থান নির্বাচন করতে হবে। জমি ভালো করে ৪-৫ বার চাষ ও মই দিয়ে আগাছামুক্ত করে মাটি ঝুরঝুরে ও সমান করতে হবে।
জমির নকশা
জমিতে বেডের প্রস্থ হবে ৭০ সেমি, দৈর্ঘ্য জমির দৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করবে। চারা বপনের দূরত্ব ১০০ থেকে ৭৫ সেমি এবং নালার প্রস্থ ৩০ সেমি ও গভীরতা ২০ সেমি হতে হবে।
বেগুনের চারা ৩৫-৪৫ দিনের হতে হবে, এ সময় চারায় ৫-৬টি পাতা গজায় এবং প্রায় ১৫ সেমি লম্বা হয়। চারা তোলার সময় যাতে শিকড় নষ্ট না হয়, সেজন্য চারা তোলার ১-২ ঘণ্টা আগে বীজতলায় পানি দিয়ে মাটি ভিজিয়ে নিতে হবে।
সার প্রয়োগ
বেগুন গাছ প্রচুর খাদ্য উপাদান শোষণ করে, তাই বেগুনের ভালো ফলন সারের উপর নির্ভর করে। সারের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে জমির উর্বরতার উপর ভিত্তি করে।
চারা লাগানোর আগে জমিতে গোবর বা কম্পোস্ট সার দিলে ভালো হয়। শেষ চাষের সময় গোবর বা কম্পোস্ট এবং টিএসপি সার জমিতে সমানভাবে ছিটিয়ে মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। এভাবে সঠিক নিয়মে বেগুন চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব।
সম্পূর্ণ ইউরিয়া এবং অবশিষ্ট এমপি সার ৫টি সমান কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে: যথাক্রমে চারা লাগানোর ১৫ দিন পর, ফুল আসা শুরু হলে, ফল ধরতে শুরু করলে, এবং ফল আহরণের সময় ২ বার।
যদি জমিতে বোরনের অভাব থাকে, তাহলে বোরাক্স বা বোরিক এসিড ১০ কেজি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে সমভাবে ছিটিয়ে আলগা করে কুপিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
পরিচর্যা ও সেচ
জমিকে প্রয়োজনীয় নিড়ানি দিয়ে আগাছামুক্ত রাখতে হবে এবং মাঝে মাঝে গাছের গোড়ার মাটি আলগা করতে হবে। চারা বোনার ৩-৪ দিন পর পর্যন্ত হালকা সেচ দিতে হবে এবং পরবর্তীতে প্রতি কিস্তি সার প্রয়োগের পর সেচ দিতে হবে।
গ্রীষ্ম ও শীত মৌসুমে ঘন ঘন সেচের প্রয়োজন হলেও বর্ষাকালে তেমন প্রয়োজন হয় না। বেগুন গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না, সেচের পানি বেশি সময় ধরে রাখা যাবে না।
গাছের গোড়া পর্যন্ত মাটি ভিজে গেলে নালার পানি ছেড়ে দিতে হবে। বেডের দুপাশের নালা দিয়ে জমিতে সেচ দেওয়া সুবিধাজনক।
খরিপ মৌসুমে পানি জমে না থাকার জন্য জমির চারপাশে নালা রাখতে হবে। সেচ বা বৃষ্টির অতিরিক্ত পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য নালা ৩০-৪০ সেমি চওড়া এবং একদিকে মৃদু ঢালু হওয়া বাঞ্ছনীয়। বর্ষাকালীন ও বারোমাসী বেগুনের জন্য পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও করতে হবে।
রোগ ও পোকা দমন ব্যবস্থাপনা
বেগুন ক্ষেতে দুইটি প্রধান রোগ (ঢলে পড়া ও গোড়া পচা) দেখা যায়। এছাড়া মোজাইক, ক্ষুদে পাতা, শিকড়ে গিঁট ইত্যাদি রোগও বেগুন গাছ ও ফলনের যথেষ্ট ক্ষতি করে।
কান্ড পচা ও ফল পচা (ফিমোসিস বাইট)
এই রোগটি এক প্রকার ছত্রাকের আক্রমণে হয়। উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়া এবং উচ্চ তাপমাত্রায় এ রোগ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এ রোগটি বীজ, আক্রান্ত গাছের পরিত্যক্ত অংশ এবং মাটির মাধ্যমে সংক্রমিত হয়।
গাছে পুষ্টির অভাব দেখা দিলে এ রোগের ব্যাপকতা বেড়ে যায়। সাধারণত নীচের পাতায় প্রথমে দাগ দেখা যায় এবং দাগগুলো স্পষ্ট গোলাকার ও ধূসর বাদামী রং ধারণ করে।
মাটির উপরি ভাগের কান্ড হঠাৎ সরু হয়ে যায়। দাগগুলোর বয়স হলে কালো পিকনিডিয়া দেখা যায়। বেশি আক্রান্ত পাতা হলুদ হয়ে ঝরে পড়ে।
মাঝে মাঝে গাছের বাকল খসে পড়ে এবং ভিতরের কাঠ বেরিয়ে পড়ে। আক্রান্ত বেগুনে ফ্যাকাশে দাগ পড়ে এবং আক্রান্ত স্থানে বাদামী ক্ষত সৃষ্টি হয়। আক্রান্ত ফল দ্রুত পচে যায়।
এই রোগের প্রতিকার
- সুস্থ-রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার করা
- সেচ বা বৃষ্টির পর গাছের গোড়ার মাটি আলগা করা
- প্রতি কেজি বীজে ২ গ্রাম ভিটাভেক্স ২০০ দিয়ে শোধন করা
- রোগ দেখা দিলে গাছের গোড়াসহ মাটিতে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম ব্যভিস্টিন/নোইন গুলিয়ে ভিজিয়ে দেওয়া
- বেগুন বীজে এ রোগ দেখামাত্র ছত্রাকনাশক স্প্রে করা
- সুস্থ ও নীরোগ বেগুন থেকে বীজ সংগ্রহ করা
- আক্রান্ত গাছ ও পাতা পুড়িয়ে ধ্বংস করা
- কার্বেন্ডাজিম (অটোস্টিন) প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম মিশিয়ে ৭-১০ দিন পরপর জমির গাছে ২-৩ বার স্প্রে করা
ঢলে পড়া রোগ
বেগুন গাছে ফুল ও ফল আসলে ঢলে পড়া রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। অম্ল বেশি জমিতে বেগুন চাষ করলে এই রোগের আক্রমণ হয়। আক্রান্ত জমিতে পরের বছর বেগুন চাষ না করাই উত্তম।
এই রোগের প্রতিকার
- রোগ দেখা দিলেই গাছ তুলে ধ্বংস করা
- রোগ প্রতিরোধী জাত (বারি বেগুন-৬, বারি বেগুন-৭, বারি বেগুন-৮) চাষ করা
- বয়স্ক পাতা ছিঁড়ে ফেলা
- এক লিটার পানিতে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডি বা ব্যভিস্টিন মিশিয়ে গাছের গোড়া ভিজিয়ে নেওয়া
- ক্ষেতের গাছ আক্রান্ত হলে ১ লিটার পানিতে ১ গ্রাম টিমসেন বা ২ গ্রাম ব্যভিস্টিন মিশিয়ে স্প্রে করা
- প্রতি ১০ দিন পরপর ২-৩ বার ৩ গ্রাম ডাইথেন এম ৪৫ বা ২ গ্রাম ব্যভিস্টিন মিশিয়ে স্প্রে করা
গুচ্ছপাতা
আক্রান্ত বেগুন গাছে এই রোগ দেখলেই প্রাথমিকভাবে গাছ তুলে ধ্বংস করা এবং ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করা। ক্ষেতের জেসিড পোকার উপস্থিতি দেখা দিলে অনুমোদিত কীটনাশক প্রয়োগ করে তা দমন করা যায়।
বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা
ছিদ্রকারী পোকা আক্রান্ত গাছের ডগা ও ফল নষ্ট করে। ফল ধরার আগে এই পোকার কীড়া বেগুনের ডগার ভেতরে খেয়ে বৃদ্ধি পায়।
প্রতি সপ্তাহে একবার আক্রান্ত ডগা কেটে ধ্বংস করলে পোকার বংশবৃদ্ধি অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব। এছাড়া সেক্স ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করেও পোকার বংশবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
পাতার হপার পোকা
এই পোকার আক্রমণ থেকে বেগুনকে রক্ষা করতে প্রতি লিটার পানিতে ৫ মিলি নিমতেল ও ৫ মিলি ট্রিকস্ মিশিয়ে পাতার নিচে স্প্রে করুন।
এছাড়া, এক কেজি আধা ভাঙ্গা নিম বীজ ২০ লিটার পানিতে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পাতার নিচে স্প্রে করতে পারেন।
প্রতি লিটার পানিতে ৫ গ্রাম গুড়া সাবান মিশিয়ে স্প্রে করাও কার্যকর। আক্রমণ বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি বা ০.৫ মিলি এডমায়ার ২০০ এসএল মিশিয়ে স্প্রে করুন।
কাঁটালে পোকা বা ইপিল্যাকনা বিটল
পোকা সহ আক্রান্ত পাতা হাতে বেছে মেরে ফেলুন। প্রতি লিটার পানিতে ৫ মিলি নিমতেল ও ৫ মিলি ট্রিকস্ মিশিয়ে স্প্রে করুন।
এক কেজি আধা ভাঙ্গা নিম বীজ ১০ লিটার পানিতে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে সেই পানি স্প্রে করতে পারেন। আক্রমণ বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি স্প্রে করুন।
সাদা মাছি পোকা
১০ লিটার পানিতে ৫০ গ্রাম সাবান মিশিয়ে পাতার নিচে সপ্তাহে ২-৩ বার ভালোভাবে স্প্রে করুন। ফসলের অবশিষ্টাংশ ধ্বংস করুন এবং হলুদ রঙের আঠা ফাঁদ ব্যবহার করুন।
আক্রমণ বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি ম্যালাথিয়ন ৫৭ ইসি বা ০.৫ মিলি এডমায়ার ২০০ এসএল মিশিয়ে স্প্রে করুন। ঘন ঘন কীটনাশক ব্যবহার না করার চেষ্টা করুন, কারণ এতে পোকা কীটনাশকের প্রতি সহনশীল হয়ে উঠতে পারে।
লাল মাকড়
প্রতি লিটার পানিতে ৫ মিলি নিমতেল ও ৫ মিলি ট্রিকস্ মিশিয়ে পাতার নিচে স্প্রে করুন। এক কেজি আধা ভাঙ্গা নিম বীজ ১০ লিটার পানিতে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে সেই পানি স্প্রে করুন। আক্রমণ বেশি হলে প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি ওমাইট বা টলস্টার স্প্রে করুন।
বেগুন চাষে রোগ-বালাই নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
এ আর মালিক সীডসের গবেষক কৃষিবিদ আব্দুল কাইয়ুম নিম্নলিখিত পরামর্শ দিয়েছেন:
- ভালো মানের বীজ সংগ্রহ করা
- সুষম সার ব্যবহার করা
- গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ২ ফুট এবং সারি থেকে সারির দূরত্ব ২.৫-৩ ফুট বজায় রাখা
- বেডের উচ্চতা ৬ ইঞ্চি রাখা
- ক্ষেতের পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা
শিডিউল স্প্রে
- চারা মুল জমিতে লাগানোর ৪/৫ দিন পরে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম কার্বেন্ডিজম গ্রুপের ছত্রাকনাশক স্প্রে করুন।
- চারা রোপণের ৭ থেকে ২৫ দিন পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে ১ বার করে ইমিডাক্লোরোপ্রিড (1ml/L) ও কার্বেন্ডিজম (1.5gm/L) স্প্রে করুন।
- হলুদ রঙের ফাঁদ শতাংশ প্রতি ১/২ টি এবং বিএসএফবি-ফেরো ফাঁদ শতাংশ প্রতি ১/২ টি দিন।
- চারা লাগানোর ৩০ দিন পরে প্রতি সপ্তাহে ১ বার [এমামেকটিন বেনজোয়েট (1gm/L) + থায়ামেথাক্সাম ক্লোরানট্টানিলিপ্রোল (0.5ml/L)] বা অন্যান্য কীটনাশক স্প্রে করুন।
- চারা লাগানোর ৩০ দিন পর থেকে প্রতি ১০/১৫ দিন পর পর ইমিডাক্লোরোপ্রিড (1ml/L) ও কার্বেন্ডিজম (2gm/L) স্প্রে করুন।
- ফসলের বিভিন্ন রোগের জন্য বিভিন্ন ছত্রাকনাশক স্প্রে করুন যেমন কার্বেন্ডিজম, স্ট্রেপটোমাইসিন সালফেট, ম্যানকোজেব + মেটালেক্সিল, প্রপিকোনাজল ইত্যাদি।
বেগুন চাষে নিয়মিত মনিটরিং ও সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পোকা ও রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়া সম্ভব।
পাতা, ফুল, ফল, পত্রবৃন্ত, ও বৃন্ত পচা রোধের জন্য প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম ম্যানকোজেব বা কার্বেন্ডিজম গ্রুপের ছত্রাকনাশক স্প্রে করুন।
ফুল ও ফল বৃদ্ধির জন্য প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম চিলেকেট জিংক ও ২ গ্রাম সলুবোর বোরন অথবা ২ মিলি Nitrobenzene (ফ্লোরা) গ্রুপের মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ব্যবহার করতে পারেন।
নেমাটোডা আক্রমণ রোধ
মূলে নেমাটোডা আক্রমণ হলে জমি তৈরির সময়, চারা লাগানোর ১৫ দিন আগে প্রতি শতাংশে ৮০-৮৫ গ্রাম ব্লিচিং পাউডার ছাই বা বালুর সাথে মিশিয়ে মাটিতে ভালোভাবে ছিটিয়ে দিন।
জমি তৈরির সময়, প্রতি শতাংশে ১২০-১৩৫ গ্রাম কার্বোফুরন গ্রুপের কীটনাশক ছাই বা বালুর সাথে মিশিয়ে মাটিতে ভালোভাবে ছিটিয়ে দিন।
ছত্রাকজনিত সমস্যা
ছত্রাকের কারণে বেগুন গাছ ঢলে পড়লে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম কার্বেন্ডিজম বা কপার-অক্সিক্লোরাইড গ্রুপের ছত্রাকনাশক গোড়ায় স্প্রে করুন।
ব্যাকটেরিয়া জনিত সমস্যা
ব্যাকটেরিয়ার কারণে বেগুন গাছ ঢলে পড়লে প্রতি লিটার পানিতে ০.২ গ্রাম স্ট্রেপটোমাইসিন সালফেট অথবা ২ গ্রাম বিসমার্থিওজল+কাসুগামাইসিন বা ক্লোরো আইসো ব্রোমাইন সায়ানুয়িক এসিড গ্রুপের ব্যাকটেরিয়ানাশক গোড়ায় স্প্রে করুন।
ফসল সংগ্রহ
ফল সম্পূর্ণ পরিপক্ক হওয়ার আগে সংগ্রহ করতে হবে। চারা লাগানোর ২-৩ মাস পর ফসল সংগ্রহের সময় হয়। প্রতি ৫-৭ দিন পরপর ধারাল ছুরি দিয়ে বেগুন সংগ্রহ করুন।
উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে জাতভেদে প্রতি হেক্টরে ৩০-৪০ টন ফলন পাওয়া যায়। কচি অবস্থায় ফলের সিকি ভাগ সংগ্রহ করলে ফলের গুণ ভালো থাকে, তবে ফলন কম হয়।
পরিশেষে বলা যায়, ক্ষেত থেকে বেগুন সংগ্রহের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যেন গাছের গায়ে আঘাত বা ক্ষত না হয়। তোলা বেগুন কাঁচা পাতা বা খড়ের উপর রাখতে হবে যাতে বেগুনে আঘাত না লাগে; এটি অত্যন্ত জরুরি।