আমার জন্মস্থান দেবীগঞ্জ। ছোটবেলা থেকেই এখানে বেড়ে উঠেছি। দেবীগঞ্জ সরকারি কলেজেই আমার পড়াশোনা। সবমিলে আমার দেবীগঞ্জ একটা নীরিহ এলাকা।
এখানে তেমন কোন খারাপ ঘটনা ঘটে না। এখন হয়তো মাঝেমধ্যে দুই একটি ছোটখাটো ব্যাপার শোনা যায়। তবে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি অনেক স্বাভাবিক।
এই দেবীগঞ্জ নিয়ে অনেক কথা বলতে পারবো। আজ সামান্য পরিচিতি তুলে ধরেছি। আশা করি, এই তথ্যগুলোর মাধ্যমে আপনারা অনেক কিছুই জানতে পারবেন। তো চলুন জেনে নিই।
দেবীগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের পঞ্চগড় জেলার অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক এলাকা। দেবীগঞ্জ উপজেলার বিস্তারিত তথ্য নিচে দেওয়া হল:
ভৌগোলিক অবস্থা:
অবস্থান: দেবীগঞ্জ উপজেলা পঞ্চগড় জেলার দক্ষিণপূর্ব অংশে অবস্থিত।
আয়তন: ২৮৫.৩৪ বর্গ কিলোমিটার।
সীমান্ত: উত্তরে তেঁতুলিয়া উপজেলা, দক্ষিণে নীলফামারী জেলা, পূর্বে বোদা উপজেলা ও পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ।
প্রশাসনিক বিভাজন:
ইউনিয়ন: দেবীগঞ্জ উপজেলায় মোট ১০টি ইউনিয়ন রয়েছে।
গ্রাম: ইউনিয়নগুলোর মধ্যে প্রায় ১০৪টি মৌজা বা গ্রাম রয়েছে।
পৌরসভা: ১টি পৌরসভা।
জনসংখ্যা:
মোট জনসংখ্যা: প্রায় ২,১৯,২৫৭ জন (২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী)।
লিঙ্গ অনুপাত: পুরুষ ও মহিলার সংখ্যা প্রায় সমান।
অর্থনীতি:
প্রধান অর্থনৈতিক কার্যক্রম: কৃষি, বিশেষ করে ধান, গম, আলু, এবং অন্যান্য ফসল উৎপাদন। এছাড়া বাণিজ্যিকভাবে কিছু ফসল যেমন পান, পাট, তামাক, এবং সবজি চাষ হয়।
শিল্প: কিছু ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, যেমন হাতের তৈরি জিনিসপত্র এবং কুটির শিল্প বিদ্যমান।
শিক্ষা:
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: এখানে বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, ও মাদ্রাসা রয়েছে।
উচ্চশিক্ষা: দেবীগঞ্জে একটি সরকারি কলেজ রয়েছে যার নাম দেবীগঞ্জ সরকারি কলেজ।
স্বাস্থ্যসেবা:
স্বাস্থ্যকেন্দ্র: উপজেলায় একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কয়েকটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, এবং বেশ কিছু প্রাইভেট ক্লিনিক রয়েছে।
পর্যটন আকর্ষণ:
বীরেশ্বরী মন্দির: এটি একটি হিন্দু ধর্মীয় স্থান যা দেবীগঞ্জে অবস্থিত।
করতোয়া নদী: এই নদীটি উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত, যা ভ্রমণ ও মাছ ধরার জন্য আকর্ষণীয় স্থান।
যোগাযোগ:
রাস্তা: দেবীগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে জেলার অন্যান্য অংশ ও দেশের প্রধান শহরগুলোর সঙ্গে ভাল সড়ক যোগাযোগ রয়েছে।
রেলপথ: নিকটবর্তী রেলস্টেশন বোদা রেলস্টেশন, যা রংপুর ও ঠাকুরগাঁওয়ের সঙ্গে সংযুক্ত।
পরিশেষে বলা যায়, দেবীগঞ্জ উপজেলাটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, কৃষি উৎপাদন ও ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির জন্য পরিচিত। এই উপজেলার মানুষজন সাধারণত কৃষিজীবী এবং খুবই অতিথিপরায়ণ।
আপনি দেবীগঞ্জ উপজেলায় না আসলে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আসলে বুঝবেন না। তাই আমার পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ রইলো দেবীগঞ্জে আসার জন্য।
লেখক: মো. আজগর আলী (করতোয়ার সম্পাদক ও প্রকাশক)
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে বহু দেশ থেকে