কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষে এক হকার নিহত হয়েছিল। সেই ঘটনার আলোকে হত্যা মামলা করা হয়েছিল। সেই হত্যা মামলায় প্রাক্তন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ১০ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ বুধবার সন্ধ্যার পরে তাদের এ রিমান্ড মঞ্জুর করে। আর এখানে রিমান্ডের জন্য আবেদন করেছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। জানা যায়, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও শেখ হাসিনা সরকারের বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে কড়া নিরাপত্তায় আজ সন্ধ্যার পরে আদালতে হাজির করা হয়।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা এ সময় এই দুজনের বিচার চেয়ে আদালত চত্বরে মিছিল করেন। আদালতে তখন সেনা ও বিজিবি সদস্যরা অবস্থান নেন। কোনরকম কোন হট্টগোল যাতে না হয় সেদিকটায় তারা নজর রেখেছেন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে জুলাইয়ের ১৬ তারিখে ঢাকা কলেজের সামনে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে দুইজন নিহত হন। তাঁদের একজন হলেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সবুজ আলী (২৬) এবং আরেকজন হলেন হকার মো. শাহজাহান (২৬)। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকার নিউ মার্কেট থানায় দুটি হত্যা মামলা হয়েছে। শাহজাহান নামে যে হকার নিহত হয়েছে তার ইন্ধনদাতা হিসেবে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে দায়ী করা হয়েছে। আর এরপরই নৌপথে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকা মহানগর পুলিশ তাদের আটক করে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা গত ৫ই আগষ্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে গিয়ে অবস্থান নেন। কিন্তু দেশে রয়ে যান অসংখ্য নেতা-কর্মী। তাদের সবার মুখোশ ধীরে ধীরে উন্মোচন হচ্ছে। অনেকেই আবার দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন বলেও জানা যাচ্ছে। এর মধ্যে আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানকে গ্রেফতারের কথা জানায় পুলিশ। আটক করার পরে তাদের ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়।
জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন প্রাক্তন এই আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আওয়ামী লীগ ২০০৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (আখাউড়া ও কসবা) আসনে মনোনয়ন দেয়। এরপর তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হলে শেখ হাসিনা তাকে আইনমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। তখন থেকেই তিনি আইনমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠ ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সহসমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম ২০ জুলাই ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের কাছে তাদের দাবি তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও বেক্সিমকো’র মালিক সালমান গ্রেফতার