মোবাইল ফোন এখন আমাদের নিত্য-প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর মধ্যে একটা। মোবাইল ছাড়া চলা যেন অসম্ভব। যোগাযোগ ব্যবস্থার সুদুরপ্রসারী উন্নতি ঘটিয়েছে এই মোবাইল ফোন। তাই এই মোবাইল ফোন আমাদের অবশ্যই যত্নে রাখা উচিত। আমি আজ আপনাদের সাথে কিছু টিপস শেয়ার করবো। আশা করি, টিপসগুলো আপনার ফোনটিকে দীর্ঘায়ু দেবে। তো চলুন শুরু করা যাক।
১. ২৪ ঘন্টায় আপনার মোবাইল ফোনটি অন্তত ৫ মিনিটের জন্য হলেও বন্ধ করে রাখবেন। যেটাকে বলা হয় শাট ডাউন। কারন, এটা তো একটা যন্ত্র। একটা যন্ত্র একটানা চলমান থাকলে একসময় তার মধ্যে ক্লান্তি (অন্য শব্দ মনে হয়নি) আসে। আপনি যখন ফোনটা ৫ মিনিটের জন্য বন্ধ করে আবার চালু করবেন তখন মোবাইল ফোনটা নতুন জীবন ফিরে পাবে। ছোটখাটো কোন সমস্যা হয়ে থাকলে সেটাও ঠিক হয়ে যাবে। বন্ধ করতে না পারলেও অন্তত রিস্টার্ট দেবেন। এতেও কিছুটা কাজ হবে।
২. আপনার মোবাইল ফোনে গুগল প্লে স্টোর ব্যতীত অন্য কোথাও হতে অ্যাপস ইন্সটল করবেন না। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া করবেন না। আপনি সাধারণত যেসব অ্যাপস ব্যবহার করবেন তার সবই গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যায়। এর বাইরেও যদি নিতান্তই প্রয়োজন হয় তাহলে তো ব্যবহার করতেই হবে।
৩. সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গায় মোবাইল রাখার চেষ্টা করবেন। বাইরে যখন চলাচল করবেন তখন প্যান্টের পকেটে না রাখাই ভালো। বুক পকেটে রাখলে ফোন নিরাপদ কিন্তু বুক পকেটে রাখাও আসলে ঠিক না। আমি প্যান্টের পকেটে এজন্যই রাখতে নিরুৎসাহিত করছি যে, অনেক সময় চাপ খেয়ে আপনার ডিসপ্লে নষ্ট হতে পারে যা বুক পকেটে হয় না। বুক পকেট থেকে আবার পরে যেতে পারে তাই যেখানেই রাখবেন সাবধানে রাখবেন।
৪. আপনার অ্যান্ড্রয়েড ফোনে প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ডেটা বা ওয়াইফাই সংযোগ চালু না রাখাই ভালো। তবে প্লে স্টোর অ্যাপগুলো আপডেট চাইলে আপনি নির্দ্বিধায় আপডেট দিতে পারেন।
৫. সবসময় মোবাইল ফোনের অরিজিনাল চার্জার দিয়ে চার্জ দেয়ার চেষ্টা করবেন। যদি অরিজিনাল চার্জার না থাকলে তাহলে ভালো ব্রান্ডের একটি চার্জার কিনে নিবেন। কখনোই নিম্ন মানের চার্জার বা বাটন মোবাইলের চার্জার দিয়ে চার্জ দেবেন না। এতে ঐ চার্জার এর তুলনায় আপনার মোবাইলের ক্ষতি অনেক বেশি হবে।
৬. প্লে স্টোর থেকে অযথা অ্যাপ ডাউনলোড করে মোবাইলে রেখে দেবেন না। যে অ্যাপগুলো আপনি মাসে ১ বার বা ২ বার ব্যবহার করেন সেগুলো ইন্সটল করে না রাখাই ভালো। কারন, এতে করে আপনার মোবাইলের র্যামের ক্ষতি হয়। র্যাম সবসময় চাপে থাকে। যদি গেম খেলেন তাহলে নির্ধারিত পছন্দনীয় গেম বাদে বাকিগুলো আনইন্সটল করে রাখবেন। অবশ্যই আপনার র্যামের দিকে নজর রাখবেন।
৭. রাত্রে ঘুমানোর পূর্বে মোবাইল কখনোই চার্জে লাগিয়ে রেখে ঘুমাবেন না। এতে মোবাইল বাস্ট হতে পারে কিংবা আপনার ফোনের ব্যাটারীর হায়াত কমে যেতে পারে। তাই এই কাজ ভুলেও করবেন না।
৮. স্যামসাং ফোনগুলোতে ডিভাইস কেয়ার নামক একটি অপশন থাকে। সেটা দিয়ে মাঝে মাঝেই ফোনের জাংক ফাইলগুলো ক্লিন করবেন। আর প্লে স্টোরে জাংক ফাইল ক্লিন করার জন্য যে বিভিন্ন অ্যাপস পাওয়া যায় সেগুলো ব্যবহার না করাই ভালো। একদিকে তো অ্যাডস এ ভরা আবার অন্যদিকে ঐ অ্যাপসগুলো অনেক র্যাম নিয়ে থাকে।
৯. আপনার ফাইল স্টোরেজ যদি আউট হয়ে যায় তাহলে কিছু ছবি, ভিডিও ডিলেট করে তা ফাঁকা করে রাখুন। নইলে আপনার ফোন হ্যাং করবে, কোন কিছু ভালো মতো কাজ করবে না।
১০. ফোনের যেকোন ছোটখাটো সমস্যায় যেমন- নেটওয়ার্ক পাচ্ছে না, কল যাচ্ছে না, রিংটোন বাজছে না, ডিসপ্লে কাজ করছে না ইত্যাদি ক্ষেত্রে আপনি অন্য কারও কাছে সমাধান নিতে যাওয়ার আগে অন্তত একবার ফোনটা রিস্টার্ট দেবেন কিংবা শাট ডাউন দিয়ে কিছুক্ষণ পরে অন করবেন। এভাবে অনেক ছোট সমস্যাই সমাধান হয়ে যায়।
১১. ফোনে একটি সুন্দর কভার ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন। ফোনের চার্জিং পোর্ট সবসময় পরিষ্কার রাখবেন। দীর্ঘসময় ধরে চার্জ দেবেন না। আর স্ক্রীনের জন্য ভালো মানের প্রটেক্টর অবশ্যই ব্যবহার করবেন। রোদের মধ্যে কখনো ফোন রাখবেন না। পানি যাতে না ঢুকে সেদিকটায় খেয়াল রাখবেন।
পরিশেষে বলবো, আপনি যদি একজন অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারী হউন তাহলে উপরের নিয়মগুলো আপনার মেনে চলা উচিত। তাহলে আপনার পছন্দের মোবাইল ফোনটা দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে পারবেন। আর ফোনের ওয়ারেন্টি থাকাকালীন কখনোই বাইরের মেকারের কাছে মোবাইল নিয়ে যাবেন না। বাইরের সব মেকার অভিজ্ঞ নয়। আপনার ফোনের সমস্যা ধরতে না পেরে উল্টা পাল্টা কাজ করলে হয়তো ফোনটা ডিড হয়ে যেতে পারে। তো আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকবেন।