সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় আটক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিজিবি সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক খুদে বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এ ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এবং অনেকেই এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলছেন।
বিচারপতির অতীত কর্মজীবন ও পরিচিতি
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন প্রভাবশালী বিচারপতি ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে অবসর গ্রহণ করেন। অবসরের পর তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুতে টেলিভিশন টক শো ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতেন এবং তাঁর মন্তব্য ও বিশ্লেষণের জন্য পরিচিত ছিলেন। তাঁর এই আচরণ অনেকের কাছে প্রশংসিত হলেও কিছু মহলে তা সমালোচনারও কারণ হয়ে উঠেছিল।
আটকের পেছনের ঘটনা
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ডনা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করা হয়। তিনি ডনা সীমান্ত দিয়ে কোনো বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন বলে বিজিবি জানায়। বিজিবির একটি টহল দল তাঁকে সীমান্তের কাছাকাছি সন্দেহজনকভাবে চলাফেরা করতে দেখে আটক করে। আটক করার সময় তাঁর কাছে কোনো বৈধ ভ্রমণ অনুমতি ছিল না বলে জানা গেছে।
তদন্ত ও প্রতিক্রিয়া
কানাইঘাট উপজেলার ডনা বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার মহিবউল্লাহ বলেন, “আটক করার পর থেকে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক আমাদের ক্যাম্পেই অবস্থান করছেন এবং তাঁর বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।”
বিচারপতির আটকের খবর শোনার পর থেকে রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে নানা ধরনের আলোচনা চলছে। কেন তিনি সীমান্ত পার হয়ে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে জল্পনা চলছে। কেউ কেউ মনে করছেন, ব্যক্তিগত কারণে তিনি ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন, আবার কেউ কেউ মনে করছেন যে এ ঘটনার পেছনে কোনো গভীর উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তবে এখনো বিষয়টি স্পষ্ট নয় এবং বিজিবি এ বিষয়ে আরও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
পরবর্তী পদক্ষেপ ও আইনগত প্রক্রিয়া
বিজিবি জানিয়েছে, আটকের বিষয়টি উচ্চপর্যায়ে জানানো হয়েছে এবং তাঁদের কাছ থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। যদি কোনো আইন ভঙ্গের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তাঁকে আইন অনুযায়ী বিচার করা হবে।
এদিকে, বিচারপতির পরিবার বা তাঁর আইনজীবী এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তাঁরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রয়োজন হলে আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলে জানা গেছে।
এই ঘটনা দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিসরে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে এই ঘটনার পরবর্তী পরিণতি দেখার জন্য। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আরও তথ্য আসার পরই পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বেবী নাজনীন দেশে ফিরছেন: সংগীত ও রাজনীতির মধ্যে নতুন অধ্যায়