৫ই আগস্ট হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর সিলেটের ডোনা সীমান্তে বিশেষভাবে আলোচিত হয়ে ওঠে। এটি একটি নিরাপদ চোরাচালান রুট হিসেবে পরিচিত, যেখানে জামায়াত নেতাদের দীর্ঘদিনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সম্প্রতি, এই সীমান্তেই ধরা পড়েন সাবেক বিতর্কিত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
ডোনা সীমান্ত এলাকায় খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, শামসুদ্দিন মানিক ভারতে পালানোর চেষ্টা করছেন। এই সীমান্তে স্থানীয় জনতা ও ছাত্ররা নজরদারি বাড়িয়ে দেয়। ৫ই আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর, মানিকের ভারতে পালানোর চেষ্টার খবর ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, যা আলোচনার ঝড় তোলে। মানিক নিজেই স্থানীয় যুবকদের কাছে তার পরিচয় দেন এবং ভারতে পালানোর জন্য সাহায্য চান।
শামসুদ্দিন মানিককে আটক করার ঘটনায় স্থানীয় যুবকদের ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে, এটি ব্যাপক সাড়া ফেলে। ভিডিওতে দেখা যায়, সাবেক বিচারপতি কলাপাতার ওপর শুয়ে আছেন এবং স্থানীয়দের সাহায্য চাচ্ছেন। ভিডিওটি ইউপি সদস্য নাজিম উদ্দিন ও বিজিবি কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হলে, বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে তাকে গ্রেপ্তার করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জানান, মানিককে ভারতে পাঠানোর জন্য সাদ্দাম হোসেন এবং তার সহযোগীরা তাকে নিয়ে এসেছিল। তবে, স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ার পর, দালালরা তাকে মারধর করে ৬০-৭০ লাখ টাকা এবং ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে পালিয়ে যায়। গ্রেপ্তারের পর, মানিককে সিলেটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়, যেখানে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
শনিবার সকালে সিলেট আদালতপাড়া ছিল উত্তেজনাপূর্ণ। জনগণ বিচারের দাবিতে বিক্ষোভে উত্থিত হয়, এবং মানিকের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে। আদালতে তার বিরুদ্ধে নানা স্লোগান ও আক্রমণ ঘটেছে, যা এলাকার পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তোলে।
এই ঘটনার পর, সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু মন্তব্য করেন যে, শামসুদ্দিন মানিকের অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য মানুষ তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছে। বিচার বিভাগে তার ভূমিকা দেশের জন্য একটি কলঙ্ক হিসেবে দেখা হচ্ছে, এবং তার বিরুদ্ধে প্রাপ্ত এই প্রতিক্রিয়া তার নিজস্ব কৃতকর্মের ফলস্বরূপ।