দীর্ঘ ১৫ বছর পর, রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রকাশ্যে ফিরে এসেছে জামায়াত। দলটির অফিস পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে, তবে তারা আপাতত রাজনৈতিক কর্মসূচির পরিবর্তে সামাজিক কার্যক্রমে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। ৫ই আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর, জামায়াতের নেতারা প্রেসিডেন্ট, প্রধান উপদেষ্টা, এবং সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যদিও দলটি এখনো কাগজে-কলমে নিষিদ্ধ, শিগগিরই জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের আদেশ প্রত্যাহার করা হতে পারে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। জামায়াত ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা এবং নিবন্ধন ইস্যু সমাধানের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনিরকে নিয়োগ দিয়েছে। আইনজীবী শিশির মনির জানান, “জামায়াত নিষিদ্ধের আদেশটি ন্যায্যতার ভিত্তিতে প্রণীত হয়নি। আমরা আশা করি, শিগগিরই এ আদেশ প্রত্যাহার করা হবে।”
জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমানও আশা প্রকাশ করেছেন যে, খুব শিগগিরই জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের আদেশ বাতিল করা হবে। তিনি বলেন, “কোটা বিরোধী আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি সরাতেই জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তবে বাংলাদেশের জনগণ এই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে।”
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারও একটি সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত নিষিদ্ধের আদেশ বাতিলের আহ্বান জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, পহেলা আগস্ট সরকার শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮ (১) ধারায় জামায়াত, ছাত্রশিবির, এবং তাদের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। সে সময় জামায়াত থেকে কোনো বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
যাইহোক, ৫ই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পরে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করলে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয় এবং জামায়াত নিষিদ্ধের আদেশ প্রত্যাহারের সম্ভাবনা দেখা দেয়।
এখন দেখা যাচ্ছে, জামায়াত আবারও তাদের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, এবং নিষিদ্ধের আদেশটি প্রত্যাহার হলে তারা পুনরায় রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় হতে পারবে।