বাংলাদেশের ১১টি জেলার ৭৪টি উপজেলা বন্যাপ্লাবিত হয়েছে। এই বন্যার ফলে এখন পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে এবং মৌলভীবাজারে আরও দুজন নিখোঁজ রয়েছেন। আজ সোমবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগসংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মৃতদের মধ্যে কুমিল্লায় ছয়জন, চট্টগ্রামে পাঁচজন, নোয়াখালীতে পাঁচজন, কক্সবাজারে তিনজন, ফেনীতে একজন, খাগড়াছড়িতে একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন এবং লক্ষ্মীপুরে একজন রয়েছেন।
এই বন্যায় ১২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৮টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে এবং মোট ৫৭ লাখ ১ হাজার ২০৪ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩ হাজার ৮৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৫২৩ জন মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ২৮ হাজারের বেশি গবাদিপশুকে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
ত্রাণ কার্যক্রম ও স্বাস্থ্যসেবা
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে। কুমিল্লা জিওসির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কুমিল্লার সব উপজেলায় সড়কপথে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছে। আজ ২০ হাজার প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করার পরিকল্পনা রয়েছে, যার মধ্যে ৮ হাজার প্যাকেট হেলিকপ্টারের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
ফেনীতে বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য একটি ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে, যেখানে সেনাবাহিনী এবং জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসকেরা সেবা দিচ্ছেন। স্থানীয় ক্লিনিক, হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্যার্তদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সাহায্য করতে নিরলস কাজ করছে। বন্যার্তদের খাদ্য, আশ্রয় ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সকলের একযোগে কাজ করা প্রয়োজন। সরকার ও সাধারণ জনগণের সহযোগিতার মাধ্যমে এই দুর্যোগ মোকাবিলা সম্ভব হবে।
আরও পড়ুন: ফারাক্কা ব্যারেজের সব গেট খুলে দিয়েছে ভারত, বিপদে বাংলাদেশ