গোপালগঞ্জে বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫০ জন, যাদের মধ্যে সাংবাদিকও রয়েছেন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া মোড়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের কর্মীদের নাম উঠে এসেছে বলে বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ।
হামলার পটভূমি ও বর্তমান পরিস্থিতি
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আনিচুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তাঁর ভাষ্যমতে, বিএনপির নেতাকর্মীরা টুঙ্গিপাড়ায় যাচ্ছিলেন। কেন এই হামলা ঘটেছে, তা এখনও জানা যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার ঘটনার জের ধরেই হামলার সূত্রপাত হতে পারে। এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা দায়ের হয়নি। সন্ধ্যা আটটার দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঘোনাপাড়া এলাকার পাথালিয়া বাংলালিংক টাওয়ারের পাশে শওকত আলীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আহতদের তালিকা ও তাদের অবস্থা
এই হামলায় আহতদের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, তাঁর স্ত্রী এবং গোপালগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সভাপতি রওশন আরা রত্না, রাজু বিশ্বাস, মাহাবুব খানসহ আরও অনেকেই রয়েছেন। আহত ১৬ জনকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া আরও ৩ জনকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহতদের মধ্যে এস এম জিলানী, তাঁর স্ত্রী এবং বাদশা মোল্লাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য আহত ব্যক্তিরা স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঘটনার বিবরণ
বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, বিকেলে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বেদগ্রাম মোড়ে একটি শান্তিপূর্ণ পথসভা শেষে টুঙ্গিপাড়ায় যাওয়ার পথে এই হামলার শিকার হন তারা। বিএনপি নেতা সিকদার শহিদুল ইসলাম জানান, ঘোনাপাড়া মোড়ে পৌঁছালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়। তারা দেশি অস্ত্র নিয়ে বিএনপির গাড়িবহরে হামলা করেন এবং গাড়ি ভাঙচুর করেন। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, বিএনপির কর্মীরা বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ব্যানার ছিঁড়ে ফেলায় তাদের বাধা দেওয়া হয়, এরপরই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
তদন্ত ও ভবিষ্যৎ করণীয়
এই ঘটনার পর গোপালগঞ্জ জেলা জুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: একাদশ শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু রবিবার: শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা