ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্তকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। পৃথক দুটি হত্যা মামলায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এই আদেশ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই রায় দেন।
শ্যামল দত্তের বিরুদ্ধে মামলা
সকালে ভাষানটেক থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় শ্যামল দত্তকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। শ্যামল দত্ত ভোরের কাগজের সম্পাদক, এবং এই মামলায় তাকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ৫ আগস্ট ভাষানটেকের দিগন্ত ফিলিং স্টেশনের সামনে ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে ফজলুর নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ফজলুর ভাই সবুজ শেখ হাসিনাসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন, যেখানে শ্যামল দত্তকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মোজাম্মেল বাবু ও শাহরিয়ার কবিরের বিরুদ্ধে মামলা
এদিকে, রমনা থানায় দায়ের করা আরেকটি হত্যা মামলায় একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু এবং লেখক শাহরিয়ার কবিরের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। এই মামলায় তাদেরও হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। ১৮ জুলাই রাজধানীর নিউ সার্কুলার রোডের একটি ফ্ল্যাটে লিজা আক্তার নামে এক তরুণী গুলিবিদ্ধ হন। পরে, ২২ জুলাই তার মৃত্যু হয়। লিজার বাবা জয়নাল শিকদার ৫ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনাসহ ১৭৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন, যেখানে মোজাম্মেল বাবু ও শাহরিয়ার কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ও রিমান্ড আদেশ
ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করার সময় এলাকাবাসীর সহায়তায় মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্তকে আটক করা হয়। এলাকাবাসী তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়। অন্যদিকে, গত রাতে বনানীর নিজ বাসা থেকে শাহরিয়ার কবিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনজনকেই আজ সকাল ৯টার পরে কড়া পুলিশ পাহারায় বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডের আবেদন বাতিলের জন্য অনুরোধ জানানো হলেও আদালত প্রত্যেককে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
আদালতের আদেশ ও তদন্ত
আদালতের এই রিমান্ড আদেশের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মামলাগুলোর তদন্তে নতুন দিক উন্মোচনের সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। তবে আসামিপক্ষ এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার পরিকল্পনা করছে।