ফেনী অঞ্চলে হঠাৎ করে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সবচেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম, ও ছাগলনাইয়া উপজেলা। এই এলাকাগুলোর বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, ও ফসলি জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে, এবং পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। অনেক মানুষ এখনও পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে।
বন্যার কারণে এই অঞ্চলগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে, এবং মোবাইল নেটওয়ার্কও কাজ করছে না। ফেনীর নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের মতে, ১৯৮৮ সালের পর এ ধরনের ভয়াবহ বন্যা আর হয়নি। ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারত থেকে আসা পানির কারণে মুহুরী, কহুয়া, এবং সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক উপরে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ফেসবুক পেজে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ফেনীতে উদ্ধার কাজে তিনটি কন্টিনজেন্ট কাজ করছে। এর মধ্যে একটি আগেই কাজ করছিল, এবং নতুন দুটি কন্টিনজেন্ট আজ থেকে যুক্ত হয়েছে। এছাড়া, আরও দুটি কন্টিনজেন্ট ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে রওনা হয়েছে, যারা বন্যাদুর্গত এলাকায় ডুবুরি সামগ্রী, লাইফ-জ্যাকেট, স্পিড বোট, ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এছাড়া, জরুরি চিকিৎসা সেবা ও খাদ্য বিতরণ কার্যক্রমও চালু রয়েছে।
ফেনীর জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার বলেন, “পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে তা কল্পনার বাইরে। অনেক মানুষ এখনও পানিতে আটকা পড়েছে, যাদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী ও কোস্টগার্ড কাজ করছে।”
এদিকে, দেশের বন্যাকবলিত জেলাগুলোতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তাদের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করেছে এবং তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থেকে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছে।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে, যেখানে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে, ডম্বুর হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার প্রজেক্ট বা ডম্বুর গেট খুলে দিয়েছে ভারত। ত্রিপুরা রাজ্যের গোমতী জেলার জেলা প্রশাসক তরিৎ কান্তি চাকমা তার সরকারি সামাজিক মাধ্যম একাউন্টে এ তথ্য প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: ভারত-বাংলাদেশ পানি সংকট সমাধানে ইউনুসের উচ্চপর্যায়ের সহযোগিতার আহ্বান