ডায়াবেটিসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূচক হলো খালি পেটে রক্তে শর্করার মাত্রা। সাধারণভাবে, ফাস্টিং ব্লাড সুগারের পরিমাণ ৫.৫ mmol/L (১০০ mg/dL) এর আশেপাশে থাকা উচিত। যদি এই পরিমাণ ৫.৫ থেকে ৬.৯ mmol/L (১০০-১২৪ mg/dL) এর মধ্যে থাকে, তখন এটি প্রি-ডায়াবেটিস হিসেবে ধরা হয়। তবে, যদি ফাস্টিং ব্লাড সুগার ৭.০ mmol/L (১২৬ mg/dL) বা তার বেশি হয়, তবে এটি ডায়াবেটিস হিসেবে গণ্য করা হয়।
ডায়াবেটিস হলো এক ধরনের মেটাবলিক ডিজঅর্ডার যা শরীরের ইনসুলিন উৎপাদন বা ইনসুলিনের কার্যকারিতা নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করে। সাধারণত, চার ধরনের ডায়াবেটিসের কথা বলা হয়: টাইপ-১, টাইপ-২, গেস্টেশনাল (গর্ভাবস্থার ডায়াবেটিস), এবং অন্যান্য।
টাইপ-১ ডায়াবেটিস হল একটি অটোইমিউন রোগ যেখানে শরীরের ইনসুলিন সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায় এবং রোগীকে ইনসুলিন প্রয়োগ করতে হয়। অন্যদিকে, টাইপ-২ ডায়াবেটিসতে শরীরে ইনসুলিন থাকে, কিন্তু সেটি কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে না। এতে করে শরীরের গ্লুকোজ স্তর বেড়ে যায়, বিশেষত যখন আমরা অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড বা শর্করা-সমৃদ্ধ খাবার খাই।
ডায়াবেটিস নির্ণয়ের জন্য সাধারণভাবে, ফাস্টিং ব্লাড সুগার এর পরিমাণ ৩.৩ থেকে ৬.৯ mmol/L (৬০-১২৪ mg/dL) হওয়া উচিত। খাবারের দুই ঘণ্টা পর রক্তে শর্করার মাত্রা সাধারণত ৭.৮ mmol/L (১৪০ mg/dL) এর নিচে থাকার কথা। যদি ফাস্টিং ব্লাড সুগার ৭.০ mmol/L (১২৬ mg/dL) বা তার বেশি হয় এবং খাবারের পর ১১.১ mmol/L (২০০ mg/dL) বা তার বেশি হয়, তাহলে এটি ডায়াবেটিসের লক্ষণ হতে পারে।
ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণাবলি অন্তর্ভুক্ত করে ঘন ঘন প্রস্রাব, অতিরিক্ত তৃষ্ণা, মুখ শুকিয়ে যাওয়া, দুর্বলতা, নিয়মিত ক্ষুধা, শরীরের ওজন হ্রাস, চোখে ঝাপসা দেখা, এবং ঘন ঘন সংক্রমণ।
ডায়াবেটিসের কারণগুলোর মধ্যে অতিরিক্ত মেদ, অসচেতনতা, কিডনি বা বৃক্কের সমস্যাগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এটি অন্ধত্ব এবং অঙ্গচ্ছেদের মতো জটিলতাও সৃষ্টি করতে পারে।
ডায়াবেটিসের চিকিৎসা সাধারণত ইনসুলিন, অ্যান্টিডায়াবেটিক ওষুধ, এবং জীবনধারার পরিবর্তনের মাধ্যমে করা হয়। নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্যগ্রহণ এবং রোগ সম্পর্কে সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডায়াবেটিসের সাথে সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে হলে সুস্থ জীবনধারা এবং নিয়মিত চিকিৎসা অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: মন খারাপ থাকলে কথাগুলো একবার হলেও শুনুন | ঝড়ে পড়া ফল থেকেও নতুন গাছের জন্ম হয় | Bangla Quotes