আপনি কেন রাগ করেন তা কি আপনি জানেন!

রাগ মানুষের সহজাত বৈশিষ্ট্য। কোন না কোন কারনে মানুষ রাগ করবেই। আপনি যতোই নিশ্চুপ থাকেন না কেন, আপনার সাথে রাগারাগি হবেই। আপনি যতোই মুখে বলুন না কেন আপনার কোন শত্রু নেই, কিন্তু আপনার শত্রু তৈরী হবেই। পৃথিবীটাই আসলে এরকম। আমি যেদিন এই পোস্ট লিখছি সেদিন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গুলি খেয়েছেন। ভাগ্য ভালো যে মারা যাননি। শুধুমাত্র কানের ক্ষতি হয়েছে।

আসল কথায় আসি। বলছিলাম রাগের ব্যাপারে। সবচেয়ে প্রধান কারন হলো আপনি যখন কারও কথার বিপরীতে যাবেন তখনই অপর মানুষটা আপনার উপর রাগ করবে। আপনি যখন কারও কথার যথাযথ উত্তর দিতে যাবেন তখনই ঐ মানুষটা রাগ করবে। এসব সবার ক্ষেত্রে নয়।

ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশি রাগ করে। কেউ কেউ প্রকাশ করে আবার কেউ কেউ নিজের মধ্যে গোপন করে রাখে। জন্মগতভাবে কারও রাগ বেশি থাকে আবার কারও রাগ কম থাকে। কারও ধৈর্য্য শক্তি বেশি আবার কারও ধৈর্য্য শক্তি কম। যার কম তার নিতান্তই রাগও কম, আর যার বেশি তার নিতান্তই রাগও বেশি।

যখন কোন ব্যক্তি আপনাকে তার মতো করে চালাতে চায় কিন্তু আপনি মানছেন না তখনও আপনার উপর সেই ব্যক্তি রাগ প্রয়োগ করবে কিংবা পুষে রাখবে। আমরা মানুষ। আধুনিক যুগের মানুষগুলো কেমন যেন! কেউ কাউকে কথা বলার সুযোগ পর্যন্ত দেই না।

রাগের অনেকগুলো কারন রয়েছে। সব কারন বলা সম্ভব না। আমি কেবল সামান্য ধারণা দিয়ে যাচ্ছি মাত্র। মূলত মানুষ মন থেকে যেমন চায় তেমন যদি কারও জন্য না পায় তখনই রাগ করে। কিন্তু বোঝার চেষ্টা করে না যে, জীবনে সবকিছু মনের মতো হয় না। কিছু বিষয় মেনে নিতে হয়। কিছু অনুশোচনা মনের মধ্যে পুষে রাখতে হয়।

আবার কারও কারও জেদ বেশি। এই বিষয়টা ছোটবেলা থেকেই বোঝা যায়। জেদ থাকা ভালো যদি তা ভালো কোন কাজে লাগানো যায়। আর যদি কেবল রাগের কারন হয় তাহলে সেই জেদ আর কিছু না পারুক কিন্তু জীবনটা ধ্বংস করতে পারবে।

পছন্দের বাইরে গেলেই যদি কেউ রাগ করে তাহলে তাকে বোঝানোর ক্ষমতা কারও নেই। এক কথায় বলা যায়, সে স্বার্থান্বেষী। সে কেবল নিজের সুখটাকেই বেছে নিচ্ছে। আর কারও কথা ভাবছে না। আর এটা নিছক বোকামী ছাড়া কিছুই নয়।

কোন কোন ক্ষেত্রে রাগ থাকা ভালো। স্বামী কোন খারাপ কাজ করছে। স্ত্রী যদি রাগ দেখিয়ে সেই কাজ বন্ধ করতে পারে তাহলে স্ত্রীর এই রাগ স্বামীর জন্য অতীব কল্যাণকর। কিন্তু কয়জন স্ত্রী এমন পাওয়া যাবে! আবার, কোথাও একটা দুই নম্বরী কাজ চলছে – আপনি গিয়ে রাগ দেখানোর ফলে তাদের সেই কাজ ভেস্তে গেলো। এমন রাগ সমাজ তথা গোটা জাতির জন্য কল্যাণকর।

কিন্তু আমরা বেশিরভাগ সময়ই ভুল জায়গায় রাগ প্রয়োগ করি। ভুলভাবে প্রয়োগ করি। যেখানে কম দরকার সেখানে বেশি রাগ প্রয়োগ করে ফেলি আর যেখানে বেশি দরকার সেখানে কম রাগ প্রয়োগ করে ফেলি। মানুষের আকাঙ্খা অনেক বেশি। মানুষ সবকিছুতেই ভালো চায়। কিন্তু সে জানে না যে, সবকিছুতে কখনোই ভালো হয় না। কিছু মন্দের সংমিশ্রণ থাকে আর এটা মেনে নিতে হয়।

যাই হোক, মানুষ তার সব অপূর্ণতাকে পূর্ণতায় রূপ দিতে, লোভ-লালসার প্রলোভনে, স্বার্থের কারনে, শুধুমাত্র নিজের ভালোর জন্য, ভুল করে, জেদ থেকে, জন্মগত সমস্যা থেকে, ভুল শিক্ষা গ্রহণের ফলে, নৈতিক অবক্ষয়ের ফলে সহ আরও নানাবিধ কারনে রাগ প্রয়োগ করে।

রাগ জীবনে সবচেয়ে ক্ষতিই বয়ে আনে বেশি। ভালো খুব কমই হয়। কারন, আমরা তো ভুল জায়গায় ভুলভাবে রাগ প্রয়োগ করে থাকি বেশি। প্রত্যেকজন মানুষের এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া জরুরী। রাগ সামাল দেয়া দরকার। জীবনটা উপভোগ করার জন্য রাগ দমিয়ে রাখতে হবে। সঠিক জায়গায় প্রয়োগ করতে হবে। তবেই জীবনে শান্তি আসবে।

আরও পড়ুন: অপমানিত হওয়ার আগেই সাবধান হোন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top