স্ত্রীকে ভালোবাসার জন্য একটি কারণই যথেষ্ট | জেনে নিন কি সেটা

স্ত্রীকে ভালো না লাগার হাজারটা কারণ থাকতে পারে, কারণ সে মানবীয় ত্রুটির উর্ধ্বে না। তবে স্ত্রীকে ভালোবাসার জন্য একটি কারণই যথেষ্ট। আর সে কারনটি হচ্ছে – সে আপনার সন্তানের মা।

পুরুষ জাতি কৃষকের মতো। বীজ বপনের মৌসুমে বীজ ছড়িয়ে অপেক্ষা করে সুন্দর একটি অঙ্কুরোদগমের। ভালো ফলনের আশায় হয়তো জমির একটু যত্নও নেই। কিন্তু নরম মাটির বুক আঁকড়ে ধরে তার প্রাণ রস শুষে কিভাবে একটি বীজ গাছে রুপান্তরিত হয় তা আমাদের নিকট অজানা।

একটি শরীরের মাঝে আরেকটি জীবন্ত শরীর টানা ৯ মাস ধরে বেড়ে ওঠার পিছনে লুকিয়ে থাকে না জানা অনেক ভেজা গল্প। অশ্রুসজল নির্ঘুম রাত, তীব্র ক্ষুধা সত্বেও খেতে না পারার নির্মম কষ্ট, হাজারো শারীরিক জটিলতা এমনকি মৃত্যু ভয়কে উপেক্ষা করে সে অপেক্ষার প্রহর গুনে ‘পিতৃত্ব’ উপহার দিয়ে ভালোবাসার মানুষটির মুখের হাসি দেখতে। সুতরাং স্ত্রীকে ভালোবাসার জন্য বাহানা খোঁজা একটা উপেক্ষা মাত্র!

সন্তান জন্মদানের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার প্রতিটি মূহুর্তে অসহ্য সীমাহীন যন্ত্রণায় বুক বিদীর্ণ করা এক একটি মর্মন্তুদ চিৎকারের গভীরে কয় সাগর ব্যাথার অশ্রু ঝরে পড়ে তা কেবল আসমান-জমীনের মালিকই বোঝেন। তাইতো আসমান থেকেই তিনি এই কষ্টের স্বীকৃতি দিয়ে বলেন:

وَ وَصَّیۡنَا الۡاِنۡسَانَ بِوَالِدَیۡہِ اِحۡسٰنًا ؕ حَمَلَتۡہُ اُمُّہٗ کُرۡہًا وَّ وَضَعَتۡہُ کُرۡہًا ؕ
অর্থ: আর আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। (কারণ) তার মা তাকে অতিকষ্টে গর্ভে ধারণ করেছে এবং অতি কষ্টে তাকে প্রসব করেছে। (সূরা আহকাফ: ১৫)

নাক-কান ফোঁড়ানোর সামান্য সূচ দেখে চিৎকার করা মেয়েটি আপনার প্রোথিত বীজের ফলটিকে আরও নিরাপদে আপনাকে হস্তান্তর করতে অস্ত্রোপচারের কক্ষে বীরাঙ্গনার মতো হেঁটে যায় স্বেচ্ছায় নিজেকে ডাক্তারের ধারালো অস্ত্রের নিচে বলী দিতে, আর ফিরে আসে স্ট্রেচারে পড়ে থাকা আহত ও রক্তাক্ত অবশ দেহটি নিয়ে। কখনোবা সত্যিকারের এই বীরাঙ্গনারা আঁতুড় ঘরের কোণায় কিংবা হাসপাতালের বেডে জীবনের ইতি টেনে নীরবে ওপারে চলে যায়।
বলুন তো, এই মানুষটিকে ভালো না বেসে থাকা আদৌ কি সম্ভব!

আপনার স্ত্রী ছিলো একজন বাবার রূপ সচেতন রাজকন্যা, যে বাবার গলা ধরে হরেক রকম প্রসাধনীর জন্য বায়না ধরতো। সৌন্দর্য রক্ষায় আপোষহীন সেই মেয়েটি আপনার সন্তানকে গর্ভে ধারণ করতে নিজের সৌন্দর্যকে চিরদিনের জন্য উৎসর্গ করে। একজন মা কখনোই তার পূর্বের শারীরিক গঠন ও সৌন্দর্য ফিরে পায় না জেনেও আপনার সেই বীরাঙ্গনা একটুও পিছপা হয়না।

আপনার কারণে হারানো সেই সৌন্দর্যের জন্য যদি আপনিই খোঁটা দেন তখন কষ্টের তীরটা কিভাবে তার হৃদয়কে ফালি ফালি করে দেবে তা বোঝার জন্য খুব বেশি পরিমাণ বিবেকের প্রয়োজন হয় না।

গর্ভে সন্তানের অঙ্কুর গজানোর দিন থেকে শুরু করে আমৃত্যু মাতৃত্ব থেকে ছুটি না পাওয়া মানুষটিকে ভালো না বেসে পুরুষত্বের দাবী অযৌক্তিক নয় কি! ভাবুন, বিবেকের চক্ষু খুলে শতবার ভাবুন…!

আরও পড়ুন: ফেসবুক থেকে নেয়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও বাস্তব কথা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top